সেই ২০০০ সাল থেকে স্বচ্ছতার সাথে পথচলা...

November 23, 2025 9:54 pm

জাতীয় স্মৃতিসৌধে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের শ্রদ্ধা

মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় অন্য উপদেষ্টারাও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধান উপদেষ্টা প্রথমে এককভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি। এরপর সেখানে এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

জানা গেছে, সাভার থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা আবার ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নতুন সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টাসহ এই সরকারে আছেন ১৭ জন। পরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান।

শপথ নেয়ার পর জাতিরে উদ্দেশ্য দেয়া ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বিভিন্ন চেষ্টায় ব্যবহৃত হয়ে যারা অপরাধ সংগঠিত করেছে তাদের আইনানুগ বিচারের মাধ্যমে শিগগিরই উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। একই কথা সব মন্ত্রণালয়, সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য। সর্বত্র অপরাধীদের বিচার হবে।

তিনি বলেন, আজ প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ও তার সদস্যরা নিজ নিজ কর্তব্য পালন করার মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে উপভোগ করবেন। তারা দেশকে গৌরবের শীর্ষে নিয়ে যাবেন এবং দেশবাসী ও জগৎবাসীকে উপভোগ করার সুযোগ করে দিবেন। আমি জাতির পক্ষ থেকে নির্ভয়ে আনন্দচিত্তে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে আসার অনুরোধ করছি।

তিনি আরও বলেন, দেশের সব মানুষকে আজ স্বাধীন নির্ভয় নিরুদ্বেগ থাকার নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য আমাদের ছাত্ররা প্রাণ দিয়েছে। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকার দেশের সবার সরকার, যেখানে থাকবে সবার আকাঙ্ক্ষা পূরণের অধিকার।

ড. ইউনূস বলেন, অরাজকতার বিষবাষ্প যেই ছড়াবে বিজয় ছাত্র-জনতাসহ মুক্ত মানুষের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ শক্তি তাকে ব্যর্থ করে দিবেন। নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী সরকার দূর হয়ে গেছে। কাল সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্রের সুবিচার, মানবাধিকার, নির্ভয়ে মতপ্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতার এবং সবার স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপনে সুযোগ পাবেন এটাই আমাদের লক্ষ্য।

প্রসঙ্গত, গণআন্দোলন ও জনরোষের মুখে পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর সাংবিধানিক সংকটের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বতী সরকার গঠনের সুযোগ না থাকলেও নতুন নির্বাচনের প্রয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে।

নতুন সরকারের উপদেষ্টারা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের নির্বাহী পরিচালক আদিলুর রহমান খান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ, সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন, পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, নারী অধিকারকর্মী ফরিদা আখতার, ইসলামি চিন্তাবিদ আ ফ ম খালিদ হাসান, গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর জাহান বেগম ও নির্বাচনব্যবস্থা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শারমিন মুরশিদ। সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা, চিকিৎসক বিধান রঞ্জন রায় ও নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক-ই-আজম।

এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নতুন সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত হয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে প্রথম।