
-
Facebook
-
Twitter
-
Linkedin
এক মাসে দাম বেড়েছে ৮২ শতাংশ, পেট চলে না ওষুধ কেনা দায়
ময়মনসিংহের ভালুকার বাসিন্দা আবদুল মান্নান খান। একসময় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ছিলেন। তিনি প্রায় ২০ বছর আগে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। সে সময় তার ওষুধসহ ডায়াবেটিস চিকিৎসার মাসিক ব্যয় ছিল ৩০০-৪০০ টাকার মতো। পরে তার উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি জটিলতা যুক্ত হয়।
তার স্ত্রী মিনা বেগমেরও ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। তখন থেকেই বাড়তে থাকে তাদের চিকিৎসা ব্যয়। ওই সময় মাসে তাদের খরচ হতো ৩-৪ হাজার টাকা। তিন বছর ধরে দুই বেলা ইনসুলিন নেওয়া শুরু করেন মান্নান। তাতে করে নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধ বাবদ প্রতি মাসে গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে তাদের। কিন্তু আয় না থাকায় ডায়াবেটিস পরীক্ষায় ব্যবহৃত স্ট্রিপ, ইনসুলিন এবং মুখে খাওয়া বিভিন্ন ওষুধের দাম বাড়ায় চিকিৎসা ব্যয় বহনে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
চিকিৎসা ও ওষুধে খরচ বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে আবদুল মান্নান বলেন, এখন বয়স হয়েছে তাই আয়-উপার্জন করতে পারি না। পরিবারে উপার্জনক্ষম কেউ নেই। আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই অসুস্থ। যখন ৩-৪ হাজার টাকার ওষুধ লাগত, তখন বিভিন্ন খাতের ব্যয় সংকোচন করে ওষুধগুলো নিয়মিত খেতাম। কিন্তু গত কয়েক বছরে ডায়াবেটিসের ওষুধ কমপ্রিড, লিজেন্টা, মেটফরমিন এবং ইনসুলিনের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। যেমন অ্যাকুচেক একটিভ স্ট্রিপের দাম ছিল ১ হাজার ১০০ টাকা, তা এখন বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩৭৮ টাকা, হুমালগ কিউইকপেন ইনসুলিনের দাম ৮৭০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫ টাকা। তাই টাকার অভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধের কোর্স শেষ করতে পারি না। আবার নিয়মিত ইনসুলিনও নিতে পারি না। যখন শরীর খারাপ হয়ে যায় তখন বাধ্য হয়ে কাটছাঁট করে ওষুধ কিনি।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) হার্টের চিকিৎসা নিতে জয়নাল আবেদিন জানান, আমি ছয় মাস আগে হার্টে রিং পড়িয়েছি। তাতে আমার আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সব টাকাই ধার-দেনা করে ব্যবস্থা করেছি। এ ছাড়াও চিকিৎসকরা নিয়মিত খাওয়ার জন্য কিছু ওষুধ লিখে দিয়েছেন। প্রথম মাসে নিয়মিত ওষুধ খেতে পারলেও এখন টাকার জন্য খেতে পারি না। ফলে বুকে ব্যথাসহ নানা ধরনের জটিলতায় বাড়ছে।
কিন্তু কি করব, ওষুধের যে দাম, খাওয়া বন্ধ না করে কি কোনো উপায় আছে? টানা ১০-১৫ দিন বা এক মাস না হয় ম্যানেজ করে খেলাম, কিন্তু মাসের পর মাস তো সম্ভব না। পেট চলে না, ওষুধ কিনব কীভাবে?
শুধু এই রোগীরা নয়, তাদের মতো অনেকেই কোর্স শেষ না করে ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনরা। দেশব্যাপী এমন হাজারও রোগী আছেন যারা বেশি দাম দিয়ে ওষুধ কিনতে কিনতে এখন প্রায় দিশাহারা।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের এক জরিপ অনুযায়ী, দেশে চিকিৎসা ব্যয়ে ওষুধের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬৪ শতাংশ। আবার ৬৮ দশমিক ৬ শতাংশ ব্যক্তির খরচ নিজেকেই বহন করতে হয়।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনে অনন্ত ১০ ধরনের ওষুধের দাম ৫ থেকে ৮২ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে অস্ত্রোপচার-পরবর্তী ব্যথানাশক ওষুধ, ভিটামিন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, চর্ম ও প্রদাহজনিত বেশ কয়েকটি ওষুধের দাম।
ওষুধ সহজলভ্য করতে যৌক্তিক দাম নির্ধারণের ব্যাপারে অত্যাবশ্যক ওষুধের তালিকা হালনাগাদ করার পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভের (এমআর) পরিবর্তে ডিজিটাল মার্কেটিং চালু করা। ওষুধের মূল্য নির্ধারণে স্বাধীন কমিশন গঠন, ট্রেড নামের বদলে জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন বা ব্যবস্থাপত্র চালু এবং সরকারের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডকে (ইডিসিএল) শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ছোট-বড় সবমিলিয়ে ৩১০টি অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ৪ হাজার ১৮০টি জেনেরিকের ৩৫ হাজার ২৯০টি ব্র্যান্ডের ওষুধ তৈরি করে। এর মধ্যে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকায় ওষুধ রয়েছে ২১৯টি। কিন্তু সরকারের অত্যাবশকীয় তালিকাভুক্ত রয়েছে মাত্র ১১৭টি। অর্থাৎ দেশে উৎপাদিত মোট ওষুধের মাত্র ৩ (২ দশমিক ৭৯) শতাংশের দাম সরকারের প্রতিষ্ঠান ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর নির্ধারণ করতে পারে। বাকি ৯৭ ভাগ মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো। আর কোম্পানিগুলোর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সুযোগ পেলেই বাড়িয়ে দিচ্ছেন ওষুধের দাম। কোম্পানিগুলো বিশ্ব বাজারে ওষুধের কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, মার্কেটিং খরচ ও ডলারের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ইচ্ছেমতো ওষুধের মূল্য ধরছে এবং পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। অথচ ১৯৮২ সালে প্রণীত ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের ১১ ধারার বিধান মতে সব ওষুধের মূল্য সরকার নিয়ন্ত্রণ করার কথা ছিল। যদিও সেই ওষুধ নীতির কয়েক দফা পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৯৪ সালে মাত্র ১১৭টি ওষুধের দাম সরকারের হাতে রেখে এবং বাকিগুলো কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হয়।
তবে বাড়েনি সরকার নিয়ন্ত্রিত অত্যাবশকীয় ওষুধের তালিকা। এ ছাড়াও বিগত সরকারের সময়েও ওষুধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩-এর ৩০(১) (২) ধারার বিধানেও শুধু গেজেটে প্রকাশিত তালিকাভুক্ত ওষুধগুলোর খুচরা মূল্য সরকার নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলা হয়েছে। ফলশ্রæতিতে ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো ইচ্ছেমতো ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তরোগীরা।
যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওষুধের মূল্য নির্ধারণে ইতিমধ্যে ইডিসিএলকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা বড় করারও পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ওষুধ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরও কমপক্ষে ৬০টি ওষুধের দাম বেড়েছে। এসব ওষুধের তালিকায় ভিটামিন, চোখের ড্রপ এমনকি অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত সুচ, সুতা, গøাভসসহ সার্জারি উপকরণও রয়েছে।
শুক্রবার সরেজমিন রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকা, নিউমার্কেট, কাঁটাবন, শাহবাগের আজিজ কো-অপারেটিভ মেডিসিন মার্কেটসহ বিভিন্ন অলি-গলির ফার্মেসির বিক্রেতারা জানিয়েছেন, সরকারের পটপরিবর্তনের পরও ওষুধের বাজারে নৈরাজ থেমে নেই।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক দিন আগেও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চুলকানিসহ ত্বকের বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইলিমেট প্লাস লোশন ৬০ এমএলে বোতল ১১০ টাকায় বিক্রি হতো। আর তা এখন বেড়ে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে দাম বেড়েছে ৮১ দশমিক ৮২ শতাংশ। একই কোম্পানির অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের জন্য ব্যবহৃত উইন্ডেল প্লাস রেস্পিরেটর সল্যুশনের দাম তিন এমএলের দাম ২০ টাকা বেড়ে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ।
ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির বয়স্কজনিত সমস্যা ম্যাকুলার ডিজেনারেশন ও বাতজনিত চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওএমজি ১০০০ এমজি ক্যাপসুলের প্রতি পাতার দাম (১০টি) ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ১১০ টাকা হয়েছে। দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। আর শতকরা হিসেবে বেড়েছে ৫৭ শতাংশ।
উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের এমডাকল ৫ মিলিগ্রামের এক পাতার দাম ৭৩ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ দশমিক ৪৩ পয়সা হয়েছে। দাম বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। একই কোম্পানির উচ্চ রক্তচাপের আরেক ওষুধ ইজোরান ৫/২০ ট্যাবলেট এক পাতার ১৫টির দাম ১৫০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা হয়েছে। দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ। গ্যাস্ট্রিকের জন্য বুক জ্বালাপোড়ার জন্য ব্যবহৃত একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের ট্যাবলেট ডিডিআর ৩০ মিলিগ্রামের প্রতি পাতায় ৯০ টাকা থেকে বেড়ে ১০৫ টাকা হয়েছে। দাম বেড়েছে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এসিআই লিমিটেডের ভিটামিন বি১, বি৬ ও বি১২ বিকোবিয়ন ক্যাপসুল প্রতি পাতার দাম ১০০ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০ টাকা হয়েছে। দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। অ্যারিস্টোফার্মা লিমিটেডের ভিটামিন জাতীয় নিউবিয়ন ১০০ এমজির ক্যাপসুল প্রতি পিস ১০ টাকা থেকে বেড়ে ১২ টাকা হয়েছে। দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ। এ ছাড়াও হেলথ কেয়ারের গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সার্জেলের ৪০ এমজির দাম প্রতি পিস ১০ টাকা থেকে ১১ টাকা হয়েছে।
দাম বাড়ার বিষয়ে নিউমার্কেট এলাকার এক ফার্মেসির মালিক মো. সালাহ উদ্দিন স্বপন বলেন, দেশে করোনার পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে কোনো না কোনো ওষুধের দাম বেড়েছে। এমনকি এক ওষুধের দাম এক মাসেই দুই-তিনবার বেড়েছে। এখনও অ্যান্টিবায়োটিক, গ্যাস্ট্রিক, ভিটামিনসহ অনেক ওষুধেরই দাম বেড়েছে।
এ ব্যাপারে শাহবাগের পপুলার মেডিসিন সেন্টারের দোকানি সঞ্জয় কুমার সময়ের আলোকে বলেন, আগে খুব বেশি দাম বাড়ত তবে এখন কিছুটা কম বাড়ছে। আমরা তো কোম্পানি রেট অনুযায়ী বিক্রি করি। কিন্তু দাম বাড়লে ওষুধ বিক্রিতে গিয়ে আমাদেরও অনেক সময় ঝামেলায় পড়তে হয়।
শাহবাগের কিডনিজনিত সমস্যায় আক্রান্ত রোগী নাদিম হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, ওষুধ তো আর নিত্যপণ্যের মতো দর-কষাকষি করে কেনা হয় না। তাই দাম বাড়লেও বিষয়টি বোঝা যায় না। কিন্তু আমরা যারা নিয়মিত ওষুধ খাই দাম বাড়লে আমরা বিষয়টি বুঝতে পারি।
ওষুধের দাম কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এ প্রসঙ্গে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের সাবেক উপ-পরিচালক ড. মো. নূরুল আলম সময়ের আলোকে বলেন, ১১৭টি জেনেরিকের পরিবর্তে মোট ওষুধের এক-তৃতীয়াংশ অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা যদি প্রণয়ন করা যায় তা হলে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে পারবে। আর ওষুধের মূল্য নির্ধারণে বিশে^র অন্যান্য দেশের মতো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর, স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং ওষুধ কোম্পানির সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন শক্তিশালী কমিশন গঠন করা যেতে পারে। আর ওই কমিটির মাধ্যমে যদি সময়ে সময়ে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করা হয় তা হলে ইচ্ছেমতো ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা কমে যাবে।
তিনি বলেন, দেশের এখন প্রায় সব বড় কোম্পানি এমআরের মাধ্যমে ওষুধ মার্কেটিং করে থাকে। শুধু জেলা বা উপজেলা নয় এমনকি গ্রামের বড় বড় বাজার পর্যন্ত কোম্পানিগুলোর মার্কেটিং নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। যার সংখ্যা কয়েক লাখ হতে পারে। এসব জনবলের বেতন-ভাতা, মোটরসাইকেলের জ্বালানি, উৎপাদিত ওষুধের মূল্যের সঙ্গে মার্কেটিং খরচ হিসেবে সমন্বয় করা হয়ে থাকে। কিন্তু এখন তো সর্বত্রই ডিজিটাল সিস্টেম। সবকিছুই ই-মেইল, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রেরণ করা যায়। তাই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে চিকিৎসকদের কাছে কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদিত ওষুধের প্রচার-প্রচারণা সহজে করতে পারে। ফলে মার্কেটিং খরচের বিরাট অঙ্কের অর্থ সাশ্রয় হতে পারে। যা ওষুধের মূল্য বহুলাংশে কমাতে সহায়ক হতে পারে।
একই মত প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ সময়ের আলোকে বলেন, আমরা গবেষণায় দেখেছি ধার করে, সম্পদ বিক্রি করেও চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে হয়েছে রোগীদের। কিন্তু ওষুধ তো আর চাল-ডালের মতো নয়, যে বেশি দামেরটা না কিনে কম দামে খাওয়া যায় অথবা অল্প পরিমাণে খেয়ে থাকা যায়। কিন্তু ওষুধের বাড়লে এমনটা করা যায় না কিংবা না খেয়েও থাকা যায়। চিকিৎসক যেভাবে প্রেসক্রাইভ করে সেভাবেই খেতে হবে নইলে অসুখ তো সারবে না বরং আরও স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে। ফলে দাম বাড়ার কারণে দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। তাদের হয় ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে নতুবা কোনোভাবে পরিবারের লোকজনকে স্যাক্রিফাইস করতে হবে। আর ওষুধ কিনতে গিয়ে যদি না খেয়ে থাকতে হয় তা হলে পুরো পরিবারের ওপর প্রভাব পড়বে। ওষুধসহ রোগ শনাক্তের খরচের পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাও বেড়েছে। অনেকেই ওষুধ কেনার সামর্থ্য হারাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ওষুধ হচ্ছে কমার্শিয়াল প্রোডাক্ট। স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়বে। বাজারে ২০১৫ সালে কিংবা ২০২০ সালে ওষুধের দাম ছিল তা এখন আশা করা যায় না। কারণ সবকিছুরই দাম বেড়েছে। তাই বাজারে ওষুধ বেশি বিক্রি হয় সেগুলোকে ফর্মূলা আওতায় আনা জরুরি।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী সময়ের আলোকে বলেন, ওষুধের দাম বাড়লে সাধারণভাবেই মানুষের ওপর এক ধরনের প্রভাব পড়ে। সরকারের যে ওষুধনীতি রয়েছে তা কার্যকর হয়নি। বাজারে কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বাড়াতে এক ধরনের অনৈতিক প্রতিযোগিতা চলছে। যদিও ডলার সংকটসহ নানা ধরনের খরচ বাড়ছে। কিন্তু তারপরও ওষুধ যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তা কতটুকু যৌক্তিক সেই প্রশ্ন রয়েছে। কারণ ওষুধের দামটা কীভাবে বাড়ে, কী কারণে বাড়ে সেটি কেউই জানে না।
এ ব্যাপারে সভায় ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান আবদুল মুক্তাদির বলেন, আমরা কোনো ওষুধের দাম বাড়াতে চাই না। কিন্তু বিদ্যুৎ, কর্মীদের বেতনসহ প্রতিটি খাতে খরচ বেড়েছে। অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা হালনাগাদ করতে সরকারকে সহযোগিতা করা হবে।
গোলাম মোস্তফা
সময়ের আলো অনলাইন/২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
আরও - জেলা সংবাদ
আরও - জাতীয় সংবাদ
আরও - স্বাস্থ্য সংবাদ
হাদিসের বর্ণনায় কালিজিরা
মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা: প্রাচীনকাল থেকে কালিজিরা মানবদেহের নানা রোগের প্রতিষেধক ও
পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণে ইসলাম
ডা. মাহতাব হোসাইন মাজেদ
সময়ের আলো/২৮ জুলাই, ২০২৪
প্রতি বছর ২৮ জুলাই বিশ্ব প্রকৃতি
যে ৫ অভ্যাস কিডনি সংক্রমণ বাড়িয়ে দেয়
কিডনির রোগ ইদানীং বেড়ে গেছে। কিডনিতে পাথর, পানি জমে যাওয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।
যে কারণে খাদ্যতালিকায় চিনাবাদাম রাখা জরুরি
যুগান্তর/অনলাইন/ ১৫ জুলাই ২০২৪
চিনাবাদাম আমাদের দেখে খুব পরিচিত একটি খাবার। গল্প, আড্ডা, সিনেমা