
-
Facebook
-
Twitter
-
Linkedin
বারুদের স্তূপে ভারত-পাকিস্তান, মুসলিম বিশ্ব কি নীরব দর্শক?
২২ এপ্রিল সকাল। জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগাম শহর তখনো স্বাভাবিক ছন্দে। আর সেই মুহূর্তেই এলোপাতাড়ি গুলিতে বিধ্বস্ত হয় গোটা এলাকা। বন্দুকধারীদের নিষ্ঠুর হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন পর্যটক, অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী।
হামলার পরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদের ‘জঘন্যতম অধ্যায়’ বলে উল্লেখ করেন। কাশ্মীরে বাড়ানো হয় সেনা মোতায়েন। গ্রামে গ্রামে চালানো হয় অভিযান। সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে ১,৫০০ জন, ভেঙে ফেলা হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর।
অন্যদিকে, পাকিস্তান সরাসরি অভিযোগ অস্বীকার করে। ইসলামাবাদের দাবি, পুরো হামলা ভারতের সাজানো ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’। উদ্দেশ্য, আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে হেয় করা।
পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তান ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে, বাতিল করে ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা এবং স্থগিত করে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য। সীমান্তের দুই প্রান্তে শুরু হয় গুলিবিনিময়, টানা দ্বিতীয় দিনের মতো।
উত্তেজনার এই মুহূর্তে মুসলিম বিশ্ব থেকে এসেছে শান্তির আহ্বান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়েদ আব্বাস আরাগচি ভারত ও পাকিস্তানকে ‘ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তেহরান দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া গড়ে তুলতে প্রস্তুত।’
আরাগচি ১৩শ শতাব্দীর পারস্য কবি সাদী শিরাজির ‘বনি আদম’ কবিতার চরণ তুলে ধরেন। যেখানে বলা হয়েছে, মানবজাতি এক দেহের মতো; একটি অঙ্গ ব্যথিত হলে পুরো দেহ ব্যথিত হয়।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আলাদাভাবে কথা বলেছেন ভারতের এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে এবং পাকিস্তানের ইসহাক দারের সঙ্গে। রিয়াদও চাইছে, দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে যেন উত্তেজনা বড় সংঘাতে রূপ না নেয়।
কাশ্মীরের রক্তাক্ত মাটি এখন গোটা দক্ষিণ এশিয়াকে শঙ্কায় ফেলেছে। সীমান্তে বন্দুকের আওয়াজ, বাতিল হওয়া ভিসা, আকাশপথে নিষেধাজ্ঞা… সব মিলিয়ে উত্তেজনা পুঞ্জীভূত। প্রশ্ন একটাই, ইরান ও সৌদি আরবের শান্তির উদ্যোগ কি যথেষ্ট হবে? নাকি ভারত ও পাকিস্তান আবারও ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অধ্যায়ের দিকে হাঁটছে?
সময়ের আলো ডেস্ক/২৬ এপ্রিল, ২০২৫