সেই ২০০০ সাল থেকে স্বচ্ছতার সাথে পথচলা...

অনিচ্ছাকৃত ভুলের কাফফারা

মানুষ ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অনেক পাপে জড়িয়ে যায়। অনেক সময় পাপে জড়িয়ে গেলে সেখান থেকে ফিরে আসার অনুভূতিও লোপ পায়। এতে পাপের বোঝা আরও ভারী হতে থাকে। কিছু গুনাহ থাকে অনেক বড় ও ভারী, যা তওবা ছাড়া মাফ হয় না। আর কিছু গুনাহ অবচেতনভাবেই হয়ে যায়। এটাকে আরবিতে বলে সগিরা গুনাহ। গুনাহ কবিরা বা সগিরা যা-ই হোক, এর পরিণাম ভালো নয়। এর কারণে দুনিয়ার জীবনে আসে বিপদাপদ, পরকালে ভোগ করতে হবে জাহান্নামের শাস্তি।

পাপ হয়ে গেলে দুনিয়াতে থাকা অবস্থায় তা থেকে মুক্ত হওয়া জরুরি। কিন্তু এই পাপের বোঝা কীভাবে হালকা করা যায়, কীভাবে মেটানো যায় তা নিয়ে অনেকেই ভাবি না। অথচ ইচ্ছে করলে পাপগুলো আমরা মিটিয়ে দিতে পারি তৎক্ষণাৎ। সেই পন্থা আল্লাহ তায়ালা নিজে আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন। নেক কাজের মাধ্যমে পাপ মেটানোর কথা বলেছেন তিনি। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি নামাজ কায়েম করো দিবসের দুই প্রান্তভাগে এবং রজনির প্রথমাংশে। অবশ্যই নেক আমল পাপগুলো মিটিয়ে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহণ করে, এ তাদের জন্য এক উপদেশ।’ (সুরা হুদ : ১১৪)

কতই না সুন্দর পথ। একটি নেক কাজই পারে আমাদের পাপগুলো মিটিয়ে দিতে। রাসুল (সা.) হজরত আবু জর (রা.)-কে বলেন, ‘হে আবু জর! যেখানেই থাকো আল্লাহকে ভয় করো এবং কোনো পাপ হয়ে গেলেই নেক আমল করো; তা তোমার পাপ মিটিয়ে দেবে’ (তিরমিজি : হাদিস ১৯৮৭)। এভাবেই পাপের কাফফারা হয় নেক আমল করার দ্বারা।
নেক কাজ নানাভাবে করা যেতে পারে। মানুষকে সালাম দেওয়ার মাধ্যমে আমরা নেকি অর্জন করতে পারি। চলতে ফিরতে হরহামেশাই যেহেতু গুনাহের আশঙ্কায় থাকি, সর্বদাই গুনাহের জালে আবদ্ধ থাকি। তাই আমাদের সালাম একটি নেক কাজ। পথে বের হলেই আমরা পরিচিত-অপরিচিত ব্যক্তির মুখোমুখি হই। শুধু ছোট্ট করে একটি সালাম দিলেই হলো। দশটি নেকি আমাদের আমলনামায় জমা হয়ে যাবে। সঙ্গে সঙ্গে গুনাহের বোঝাও হালকা হবে। পাশাপাশি পরস্পর ভ্রাতৃত্ব আর মহব্বতের সেতুবন্ধও তৈরি হবে।

আমরা দান-সদকার মাধ্যমে নেক কাজ করতে পারি। অন্যকে সহযোগিতার মাধ্যমে এবং সর্বদা সত্য কথা বলার মাধ্যমেও নেক করতে পারি। সুযোগ হলে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে পারি। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কারও কোনো পাপ হয়ে গেলে সে যদি উত্তমরূপে ওজু করে এবং দুই রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে মাফ চায়, আল্লাহ তাকে মাফ করে দেন।’ (মুসনাদে আহমাদ : ২)

এভাবেই আমরা খুঁজে খুঁজে নেক কাজ করতে থাকলে আমাদের দ্বারা যদি কোনো গুনাহ হয়েও যায় সেই নেক কাজগুলো গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। কেয়ামতের দিন যখন আমলনামা পাল্লায় তোলা হবে, আশা করা যায় আমাদের নেক আমলগুলো ছাড়িয়ে গুনাহের পাল্লা কিছুতেই ভারী হয়ে উঠতে পারবে না। এই ছোট ছোট নেক কাজগুলোই সেদিন পাহাড়সম হয়ে আমাদের নাজাতের উসিলা হবে। আল্লাহ সবাইকে বোঝার ও আমল করার তওফিক দিন।

আবদুল্লাহ আল মাসউদ
সময়ের আলো/২১ এপ্রিল, ২০২৫

আরও - ইসলাম সংবাদ